রোজা পালনে নারীদের যে বিষয়গুলো জানা জরুরি


রোজা পালনে নারীদের যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

গর্ভবতী ও স্তন্যদায়িনী নারী রোজা ভাঙ্গতে পারবে। যদি রোজা পালনের কারণে তার নিজের বা শিশু সন্তানের ক্ষতি বা জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা থাকে। পরবর্তী সময়ে তাকে একদিনের বদলে একদিন ওই রোজা কাযা পালন করতে হবে।

ইসলামের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক সুস্থ ও বিবেকসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য রমজান মাসের রোজা রাখা ফরজ।

আর এই রমজানের ফরজ রোজা পালনে নারীদের বিশেষ কিছু করণীয় রয়েছে। যা পালন করা নারীদের একান্ত আবশ্যকীয় কর্তব্য। যা সংক্ষিপ্ত আকারে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

কোনো মেয়ে যদি বালেগ হওয়ার পর লজ্জার কারণে সিয়াম বা রোজা পালন না করে, তাহলে তাকে খালেছ ভাবে তাওবা পালন করতে হবে এবং ভাংতি রোজাগুলো কাযা পালন এবং প্রতি দিনের বদলে একজন করে মিসকিন খাওয়ানো আবশ্যক। মহান আল্লাহর হুকুম পালনে লজ্জা-দ্বিধা করা ঠিক নয়।

কোনো নারীর হায়েজ (ঋতুস্রাব) বা নিফাস (সন্তান প্রসবকালীন ইদ্দত) সন্ধ্যায় অথবা রাতে বন্ধ হয়ে গেলে রাতেই ওই নারীকে রোজার নিয়্যত করতে হবে। গোসল করার আগেই ফজরের সময় (সকাল) হয়ে গেলেও রোজা শুদ্ধ হবে।

কোনো নারী যদি জানে যে, আগামীকাল ভোরে ঋতুস্রাব হবে তবুও সে রোজা রাখার নিয়তে সেহরি খাবে; যতক্ষণ না পর্যন্ত সে স্রাব দেখে। ঋতুস্রাব দেখার পরই কেবলমাত্র সে রোজা ভঙ্গ করতে পারবে।

রমজান চলাকালে যেসব নারী ঋতুস্রাব দেখা দেবে তা স্বাভাবিকভাবে শেষ হতে দেয়া উচিত। অতিরিক্ত সওয়াবের আশায় ওষুধ বা অন্য কোনো উপায়ে ঋতুস্রাবকালীন সময়কে কমানো বা ঋতুস্রাব বন্ধ করা ঠিক নয়।

ইসলামি শরীয়ত মতে রোজার সময় ঋতুস্রাব কারণে রোজা ভঙ্গ করলে পরবর্তী সময়ে তা কাযা পালন করার স্পষ্ট বিধান রয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত মুয়াযাহ বিনতে আব্দুল্লাহ আল-আদাবি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে বলি- ঋতুবর্তী নারী কেন সওম বা রোজা কাযা করে, সালাত কাযা করে না? তিনি বললেন তুমি কি হারুরি? আমি বললাম না, কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করছি, তিনি বললেন, আমাদের এমন হতো, অতঃপর আমাদেরকে শুধু সাওম বা রোজা কাযার নির্দেশ দেয়া হতো, সালাত কাযার নির্দেশ দেয়া হতো না। (বুখারী, মুসলিম)।

(হারুরি হচ্ছে খারেজি সম্প্রদায়ের একটি গ্রুপ। কুফার নিকটে অবস্থিত হারুরা শহরে তাদের বসতি, তাদের মধ্যে দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি ও কঠোরতা ছিল অত্যধিক। এজন্য তাদেরকে হারুরি বলা হতো)

তিরমিযীর এক বর্ণনায় এসেছে- হজরত আয়েশা (রা.) আনহা থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমরা রাসূল (সা.) এর যুগে ঋতুবর্তী হতাম, অতঃপর পবিত্রতা অর্জন করতাম, তিনি আমাদেরকে সওম বা রোজা কাযার নির্দেশ দিতেন, কিন্তু সালাত কাযার নির্দেশ দিতেন না। এ হাদিস অনুযায়ীও ঋতুবর্তী নারী সিয়ামের কাযা পালন করবে, নামাজের কাযা করবে না। (তিরমিজি)।

যদি কোনো নারী চল্লিশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে নিফাস বন্ধ হয়ে যায়, সেদিন থেকেই গোসল করে পবিত্র হয়ে রোজা পালন করবে এবং নামাজ আদায় শুরু করবে।

পক্ষান্তরে কোনো নারী যদি চল্লিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও নিফাসের রক্ত দেখা দেয়, ইহা নিফাস বলে গণ্য হবে না। অতএব, গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে রোজা ও নামাজ শুরু করতে হবে।

নিফাসের সময়ের সঙ্গে যদি হায়েজের সময় সংযুক্ত হয় তবে এটিকে হায়েজ মনে করতে হবে। সেক্ষেত্রে রোজা থেকে বিরত থাকবে এবং ইদ্দত পূর্ণ করে পবিত্র হয়ে রোজা পালন করবে।

গর্ভস্থিত সন্তানের শারীরিক গঠনের কোনো একটি অঙ্গ অর্থাৎ হাত, পা, মাথা ইত্যাদি গঠনের পর গর্ভপাত হলে, গর্ভপাতের পর নিফাস মনে করতে হবে এবং ইদ্দতপূর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত রোজা রাখবে না।

আর যদি গর্ভস্থিত সন্তানের কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গঠিত হওয়ার পূর্বে গর্ভপাত হয়, তখন গর্ভপাতের পরবর্তী সময়ে স্রাব নিফাস বলে গণ্য হবে না বরং মোস্তাহাযাহ বলে গণ্য হবে। আর এক্ষেত্রে সক্ষম হলে রোজা পালন করতে হবে। আর যদি গর্ভপাতের ফলে অসুস্থ্য হয়ে যায় তবে তা ভিন্ন কথা। নিফাস ব্যতিত রক্তস্রাবে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।

গর্ভবতী ও স্তন্যদায়িনী নারী রোজা ভাঙ্গতে পারবে। যদি রোজা পালনের কারণে তার নিজের বা শিশু সন্তানের ক্ষতি বা জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা থাকে। পরবর্তী সময়ে তাকে একদিনের বদলে একদিন ওই রোজা কাযা পালন করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইন্নালল্লাহা ওয়াজাআ’ আনিল মুসাফিরিস সাওমা ওয়া শাত্বারাস সালাতি, ওয়া আনিল হামিলি ওয়াল মুরজিই’স সাওমা। (তিরমিজি)।

অর্থাৎ : আল্লাহ তায়ালা মুসাফিরদের জন্য রোজা রাখতে বারণ করেছেন এবং  নামাজের অংশ বিশেষ ছাড় দিয়েছেন, আর গর্ভবর্তী ও স্তন্যদানকারীর জন্য রোজা পালনের বাধ্য বাধকতা শিথিল করেছেন। অর্থাৎ পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে।

যে নারীর ওপর রোজা ফরজ হয়েছে, তার সম্মতিতে রমজানের দিনে স্বামী-স্ত্রীতে যৌনকার্য সংঘটিত হলে, উভয়ের ওপর একই হুকুম কার্যকরী হবে (কাযা করতে হবে ও কাফফারা দিতে হবে)। আর স্বামী যদি জোর করে সহবাস করে তাহলে স্ত্রী শুধু কাযা আদায় করবে, কাফফারা দিতে হবে না। তবে স্বামীকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। যেসব পুরুষ লোক নিজেদেরকে সংযত রাখতে পারে না, তাদের স্ত্রীদের উচিত দূরে দূরে থাকা এবং রমজান দিবসে সাজ-সজ্জা না করা।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার দরবারে বিনীত প্রার্থনা- তিনি তাঁর বান্দা-বান্দিদের সঠিক পন্থায় ও উত্তমভাবে ইবাদত, জিকির ও শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে রোজা পালনের তাওফিক দান করুন।

আল্লাহ যেন রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের এ মাসে আমাদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণ দেন এবং জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে কবুল করে নেন। আমীন।

সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ


from Tuneshut https://ift.tt/3dbQHXS
bangla,bangla tech,bangla tech s,bangla news,bangla tutorial,tech bangla it,tech bangla,bangla tech channel exposed,tech bangla pro,bangla tech channel roasted video,bangla tv channel,bangla channels,in bangla,bangla movie,bangla news 24,bangla review,bangla boy,news bangla,new tech,tech,tyag bangla movie,shaj tech,news bangla 24,debtech bangla channel,like app bangla,bangla android,bangla tutorial idm, bangla,bangla funny video,bangla movie,bangla new movie,funny facebook posts,new bangla funny video,funniest facebook posts,post office,bangla natok,bangla movie song,bangla facebook post,bangla tutorial,new bangla natok,bangla full movie,bangla cinema,bangla dhadha,bangla natok post mortem,bangla funny facebook post,bangla motivational video,bangla facebook funny,facebook post,facebook funny post, Credit Tuneshut -

source https://www.bangla-hacking.xyz/2020/05/blog-post_2.html

Post a Comment

0 Comments